সান্ডা খাওয়ার শরীয়তসম্মত বিধান: ইসলাম কী বলে?

খুলনা, ১৬ মে ২০২৫অনেকেই প্রশ্ন করেন, শরীয়তের দৃষ্টিতে সান্ডা খাওয়া হালাল না হারাম? বিশেষ করে সান্ডার তেল বা মাংস ব্যবহারকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। ইসলামের মূল উৎস কুরআন হাদীস পর্যালোচনা করলে এই বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা পাওয়া যায়।

সান্ডা, যার বৈজ্ঞানিক নাম Uromastyx, একটি প্রজাতির মরুভূমি প্রাণী। এটি দেখতে গুইসাপের মতো হলেও আসলে আলাদা প্রজাতির। আরব অঞ্চলে এটিকে দাব্ব (الضبّ) নামে ডাকা হয়। হাদীসে প্রাণী সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বর্ণনা পাওয়া যায়।

সহীহ বুখারী মুসলিম-উল্লেখ রয়েছে, নবী করিম (সা.)-এর সামনে সাহাবিরা সান্ডা রান্না করে আনেন। তিনি নিজে তা খাননি, কারণ এটি তার পরিচিত প্রাণী ছিল না। তবে তিনি সেটিকে হারাম বলেননি। সাহাবি খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা.) নবী করিম (সা.)-এর সম্মুখেই তা খেয়েছিলেন এবং রাসূল (সা.) তাতে আপত্তি করেননি।

প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন,
এটি আমার এলাকার প্রাণী নয়, তাই আমি এতে অভ্যস্ত নই।”
— (সহীহ বুখারী, হাদীস: ২৫৭৫)

ফিকাহবিদগণের মধ্যে এই বিষয়ে মতভেদ রয়েছে:

  • হানাফি মাজহাব মতে, সান্ডা খাওয়া মাকরূহ (অপছন্দনীয়) হলেও হারাম নয়

  • মালিকি, শাফেয়ী হাম্বলী মাজহাব মতে, এটি সম্পূর্ণ হালাল

বর্তমানে সান্ডার তেলকে যৌন উত্তেজক হিসেবে প্রচার করে বিক্রি করা হয়। তবে বিষয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানের নিশ্চিত প্রমাণ খুবই সীমিত। অনেক সময় এসব তেলের নামে ভেজাল বা ক্ষতিকর বস্তু বিক্রি করা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

সান্ডা খাওয়া হারাম নয়, বরং হালাল প্রাণীগুলোর অন্তর্ভুক্ত। তবে কেউ পছন্দ না করলে না খাওয়াই উত্তম। এছাড়া ভেজাল বা প্রতারকচক্রের ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য মুসলিমদের সতর্ক থাকা জরুরি।

তথ্যসূত্র: সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম, ইসলামিক ফিকাহ গ্রন্থাবলি

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন